হলুদ ফলের উপকারিতা এবং অপকারিতা

হলুদ, লাল কিংবা সবুজ, যেকোনো রঙের ফল শুধু দেখতেই আকর্ষণীয় নয়, বরং খেতেও মজাদার। কিছু ফল আমাদের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। আর কিছু কিছু রঙের ফল আমাদের খুশী ও আনন্দের মাত্রাকেই বাড়িয়ে দেয়। এসব ফলের মধ্যে হলুদ রঙের ফল অন্যতম। হলুদ ফলের শ্রেণিভূক্ত ফলগুলো হলো-কলা, আম, লেবু, হলুদ তরমুজ, আনারস প্রভৃতি। এসব ফলে বায়ো-ফ্লাভোনওয়েড এবং ক্যারোটিনয়েড বিদ্যমান রয়েছে। এদের মধ্যে অধিকাংশ ফলই আবার পুষ্টির শক্তিঘর হিসেবে পরিচিত। তাই প্রতিদিন হলুদ ফল খাওয়ার নানা স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে।

হার্টের সমস্যা এড়াতে

হলুদ ফল বিশেষ করে কলা এবং লেবুতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে, যা হজম প্রক্রিয়া ভালো রাখতে সাহায্য করে। আমাদের শরীরের বেশির ভাগ হার্টের সমস্যাই চর্বির কারণে হয়ে থাকে। তাই নিয়মিত এসব ফল খেলে শরীরের অতিরিক্ত চর্বি গলে তা শক্তিতে রুপান্তরিত হয়। এর ফলে হার্টের সমস্যা এবং হ্যাট অ্যাটাকের ঝুঁকি সহজেই এড়ানো যায়।

দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখে

হলুদ ফলে ভিটামিন-এ বিদ্যমান থাকায় তা আমাদের দৃষ্টিশক্তির জন্য অনেক উপকারী। এটি চোখের যেকোনো রোগ এবং অন্ধ হওয়ার ঝুঁকি কমাতে ভূমিকা রাখে।

হজমশক্তি বাড়ায়

হলুদ ফল খাওয়ার আরেকটি সুবিধা হলো তা হজম প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটায়। এর ফলে খাবার দ্রুত হজম হয়। হজম সংক্রান্ত নানা সমস্যা সমাধানেও ভূমিকা রাখে হলুদ ফল।

ইমিউন সিস্টেমের উন্নতি ঘটায়

হলুদ ফলে ভিটামিন-সি বিদ্যমান রয়েছে। নিয়মিত এসব ফল খেলে শরীরের ইমিউন সিস্টেম অনেক শক্তিশালী হয়। এগুলো কার্ডিওভাসকুলার সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যা প্রতিরোধে কাজ করে।

সুন্দর ত্বকের যত্নে

হলুদ ফলে ভিটামিন-সি এবং ভিটামিন-ই প্রচুর পরিমাণে রয়েছে। এই উপাদানগুলো ত্বককে মসৃণ এবং কোমল রাখতে সাহায্য করে। এগুলো ত্বকের নানা সমস্যা বিশেষ করে ব্রণ এবং চর্মরোগজনিত যেকোনো সমস্যাও দূর করে। নিয়মিত এসব ফল খেলে ত্বকের তারুণ্য ফিরে আসে।

ক্ষত নিরাময়ে

হলুদ ফল খেলে যেকোনো ক্ষত তাড়াতাড়ি ভালো হয়। কেননা এসব ফলে যেসব ভিটামিন রয়েছে তা শরীরের ইমিউন ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। একই সঙ্গে এর অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়া বৈশিষ্ট্য ক্ষতের সংক্রমণ কমিয়ে তা তাড়াতাড়ি সারিয়ে তুলতে ভূমিকা রাখে।

হাড় দাঁত মজবুত করে

হলুদ ফলে বিদ্যমান ভিটামিন-ডি এবং ক্যালসিয়াম হাড় ও দাঁতের জন্য খুবই উপকারী। এসব ফল শরীরে ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করে হাড় এবং মাংসপেশীকে শক্তিশালী করে। একই সঙ্গে দাঁতকেও মজবুত রাখে। তাই হাড় ও দাঁতের সুরক্ষায় নিয়মিত হলুদ ফল খান।

অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট

অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের ভালো উৎস হলো হলুদ ফল। এই উপাদানটি শরীরের অসুস্থতা কাটাতে ভূমিকা রাখে। তবে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এটি অ্যান্টি-এজিং ক্রিমে ব্যবহার করা হয়। এতে রেটিনল এবং ভিটামিন এ১ বিদ্যমান থাকায় তা বলিরেখা দূর করে ত্বককে সুন্দর করে তুলতে সাহায্য করে।

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া

অন্য অনেক ফলের মতোই হলুদ ফলেরও কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে। যদিও সেগুলো তেমন ক্ষতিকর নয়, তারপরও হলুদ ফল খাওয়ার সময় নিচের সমস্যাগুলো হতে পারে-

ওজন বাড়ে

কলায় উচ্চ মাত্রার কার্বোহাইড্রেট রয়েছে। তাই এটি খুব বেশি খাওয়া ঠিক নয়, না হলে ওজন বাড়তে পারে। এ ক্ষেত্রে প্রতিদিন একই খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলুন।

অ্যালার্জি

যাদের ত্বক অনেক বেশি সংবেদনশীল তাদের হলুদ ফলে অ্যালার্জি হতে পারে। কারও কারও এসব খাবারে র্যাশ এবং খিঁচুনি হতে পারে। তাই আগে নিশ্চিত হয়ে তবেই খান।

হলুদ ত্বক

হলুদ ফলে বেটা ক্যারোটিন বিদ্যমান থাকায়, এটি ত্বকের হালকা হলুদাভে পরিবর্তন আনতে পারে। তাই প্রতি সপ্তাহে ভিন্ন ভিন্ন রঙের ফল বিশেষ করে আপেল তথা আঙুর খান। এতে করে অপ্রীতিকর চেহারা সহজেই এড়ানো যাবে।

ডায়রিয়া

হলুদ ফল প্রচুর পরিমাণে খাওয়ার ফলে হজমে সমস্যা দেখা দেয়। এর ফলে পেটের সমস্যা বিশেষ করে ডায়রিয়া হতে পারে।

গর্ভাবস্থায়

গর্ভকালীন সময়ে হলুদ ফল বিশেষ করে আনারস খাওয়া একেবারেই এড়িয়ে চলুন। তা না হলে গর্ভপাতের সম্ভাবনা থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ten − eight =