দঙ্গল বেঁধে মঙ্গলে!

ভিনগ্রহে বসতি গড়ার লক্ষ্যে বৈজ্ঞানিক বিশ্বে চলছে তুমুল গবেষণা। ভারতই বা কেন পিছিয়ে থাকবে। তাই, মঙ্গলে যাওয়ার জন্য টিকিট কেটে ফেললেন প্রায় ১ লাখ ৩৯ হাজার ভারতীয়।
২০১৮ সালের ৫ মে মঙ্গলে নিয়ে যাচ্ছে মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র নাসা। এই মিশনের জন্য অনলাইনে টিকিট বিক্রি হয়েছে। মঙ্গলে যাওয়ার টিকিট বুকিংয়ে বিশ্বে ভারত তৃতীয় স্থানে।

যারা মঙ্গলে যাবেন, তাদের নাম একটি সিলিকন ওয়েফার মাইক্রোচিপে থাকবে। ইলেক্ট্রন বিমের মাধ্যমে সেই নামগুলো ঢোকানো হবে। তারপর সেই চিপটি মহাকাশযানের একেবারে মাথায় জুড়ে দেওয়া হবে। নাসার এই মঙ্গল অভিযানে অভূতপূর্ব সাড়া মিলেছে ভারত থেকে। গোটা বিশ্ব থেকে এখনও পর্যন্ত ২৪ লাখ ২৯ হাজার ৮০৭ জনের নাম পেয়েছে নাসা। ভারত রয়েছে তৃতীয় স্থানে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীনের পরেই।
মহাকাশ গবেষকরা বলছেন, যেহেতু এই মিশনটি নাসার, ফলে স্বাভাবিকভাবেই মার্কিন মুলুকে বেশি টিকি বিক্রি হচ্ছে। তবে তাদের কাছে তাত্‍‌পর্যপূর্ণ হল, চীন ও ভারত থেকে এত মানুষের সাড়া।
নাসার গবেষক অ্যান্ড্রু গুড টাইমস অব ইন্ডিয়াকে জানিয়েছেন, গত সপ্তাহেই টিকিট বুকিং শেষ হয়ে গেছে। আর নাম নেওয়া হচ্ছে না। মোট ৭২০ দিনের এই মিশনে মঙ্গলের নিরক্ষরেখায় পৌঁছবে ২৬ নভেম্বর ২০১৮ সালে।

মহাশূন্যে মহাকাশযানে পুরো একটি বছর কাটাতে কেমন লাগে?

চমৎকার দৃশ্য দেখার সুযোগ থাকলেও, বাড়ি থেকে এতদিন দূরে গিয়ে, মহাশূন্যের আন্তর্জাতিক একটি স্টেশনে গিয়ে থাকাটা ছুটি কাটানোর জন্য আদর্শ নাও হতে পারে।

কিন্তু মার্কিন নভোচারী স্কট কেলিকে ঠিক এই কাজটি করতে হয়।

আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে গিয়ে তাকে একটানা ৩৪০ দিন থাকতে হয়েছে।

বিবিসিকে তিনি বলছিলেন, ‘আমি একজন নভোচারী। আমরা মহাশূন্যে যাই। হয়তো একদিন আমরা মঙ্গলে যাবো। তখন হয়তো সেখানে আমাদের লম্বা সময় ধরে থাকতে হবে। তাই আমরা মহাশূন্যে থেকে বোঝার চেষ্টা করি, সেখানে লম্বা সময় থাকতে কেমন লাগবে? আর এজন্য একটি স্পেস স্টেশন হচ্ছে আদর্শ জায়গা।’

কিন্তু মহাশূন্যে থাকাটা ছুটি কাটানোর মতো কোনো ব্যাপার নয়। সেখানে তাদের অনেক কাজ করতে হয়।

তিনি বলছেন, ‘ভোর ছয়টার সময় আমাদের ঘুম থেকে উঠতে হয়। সেখানে আমাদের কাজকর্মকে তিনটা ভাগে ভাগ করা যেতে পারে। প্রথমত বৈজ্ঞানিক গবেষণা। এরপর আছে স্টেশনের বিভিন্ন হার্ডওয়্যার মেরামত করা বা ঠিকঠাক রাখা। এর বাইরে আমাদের প্রতিদিন অনেক ব্যায়ামও করতে হয়।’

নিজেকে বৈজ্ঞানিক বলে দাবি করেন না মি. কেলি। তিনি বরং নিজেকে বিজ্ঞানের একটি বিষয় বলে মনে করেন।

‘আমাকে হয়তো বিজ্ঞানের অনেক পরীক্ষা-নিরীক্ষার চালক বলা যেতে পারে’, তিনি বলছিলেন।

স্কট কেলি বলেন, ‘যখন অনেক দিন চলে যায়, তখন আমরা স্পেস স্টেশনের জানালা দিয়ে বাইরে তাকিয়ে দেখি। বিশেষ করে যেসব পরীক্ষা নিরীক্ষা চালানো হয়েছে, সেগুলো নজরদারি করি।’

‘মাঝে মাঝে আমরা পৃথিবীকে দেখি। বেগুনি নীলের মাঝে পৃথিবীকে দেখতে খুব ভালো লাগে। তখন আমাদের নিজেদের খুব ভাগ্যবান মনে হয়, যে এই সুন্দর স্থানটি আমাদের ঠিকানা। কিন্তু একই সময় পৃথিবীর অনেক জায়গা দূষণে আক্রান্ত বলেও দেখতে পাই। এখান থেকে পরিষ্কার বোঝা যায় যে, পৃথিবী কিভাবে পাল্টে যাচ্ছে।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

2 × five =