অবেক্ষণ পত্রিকার অনুষ্ঠান
বিজয় মুখোপাধ্যায়, গোবরডাঙা, উত্তর ২৪ পরগনা ##
“অবেক্ষণ” পত্রিকার রাখীপূর্ণিমা সংখ্যা প্রকাশ উপলক্ষে গোবরডাঙা গবেষনা পরিষৎ এর সভা কক্ষে বসেছিল চাঁদের হাট। ১৮ই আগষ্ট রবিবার বিকালের এই অনুষ্ঠানে পত্রিকা প্রকাশ ছাড়াও “ইতিহাস এবং গর্বের শহর গোবরডাঙা” শীর্ষক একটি মনোজ্ঞ আলোচনা হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিশিষ্ট সমাজ কর্মী কালীপদ সরকার মহাশয়।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই “পুরনো গোবরডাঙার স্মৃতিকথা” বিষয়ক বক্তব্য রাখেন গোবরডাঙা গবেষনা পরিষৎ এর সম্পাদক দীপক কুমার দাঁ। তাঁর আলোচনায় গোবরডাঙার ঐতিহ্যের পাশাপাশি তাঁর শৈশবকালে দেখা এবং শোনা গোবরডাঙার কথা উঠে আসে। তাঁর আলোচনায় শ্রীশচন্দ্র বিদ্যারত্ন, শ্রীমতি হাসিরাশি দেবী প্রমুখ বরেণ্য ব্যক্তিত্বদের নাম উঠে আসে যারা সকলেই গোবরডাঙার কৃ্তি সন্তান।
এরপর অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক সুখেন্দু দাস “গোবরডাঙার সঙ্গীত চর্চার সাবেকীয়ানা” শীর্ষক বিষয় নিয়ে বলেন। সঙ্গীতের নানা ধারায় গোবরডাঙা কতটা প্রসিদ্ধ ছিলো তার পাশাপাশি যন্ত্রসঙ্গীতে গোবরডাঙার নাম যারা উজ্বল করেছেন তাঁদের কথা তিনি উল্লেখ করেন।
কর্মসুত্রে সাংবাদিক হিসাবে পশ্চিমবঙ্গ তথা ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তের নামি অনামি বিভিন্ন মানুষের সঙ্গে সরাসরি সংযোগ স্থাপিত হয়েছিল পলাশ মুখোপাধ্যায়ের। অবেক্ষণ পত্রিকার প্রধান সম্পাদক পলাশবাবুর বক্তব্যের বিষয় ছিল “গর্বের শহর গোবরডাঙা”। তার আলোচনায় উঠে আসে যে ভারতের প্রাক্তণ রাষ্ট্রপতি প্রনব মুখোপাধ্যায়, জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তণ অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের মত স্বনামধন্য থেকে শুরু করে আমজনতা এমন অনেক মানুষের কাছে তিনি “গোবরডাঙা” এই নামটা উচ্চারণ করে যে অভূতপূর্ব প্রতিক্রিয়া পেয়েছেন সেই অভিজ্ঞতার কথা। তারা প্রত্যেকে ব্যক্তিগত ভাবে গোবরডাঙার কথা জানে অথবা চেনে।
আলোচনার শেষ পর্যায়ে প্রাক্তন শিক্ষক, সমাজকর্মী পবিত্র কুমার মুখোপাধ্যায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সঙ্গে গোবরডাঙার পরোক্ষ যোগাযোগ কতটা ছিল তা বিভিন্ন প্রামান্য ইতিহাস সহযোগে ব্যখ্যা করেন। তার মুখ থেকে জানা যায় যে কিশোর রবীন্দ্রনাথের ইংরাজী বিষয়ের গৃহশিক্ষক হিসাবে যাকে নিযুক্ত করা হয়েছিল সেই প্রমথ নাথ বসু আদতে গোবরডাঙারই ভূমিপুত্র। এছাড়াও বিভিন্ন সময়ে কি ভাবে রবীন্দ্রনাথের সঙ্গে গোবরডাঙার মানুষজনের যোগসূত্র গড়ে উঠেছে তাও উঠে আসে তার বক্তব্যে।
এরপর অনুষ্ঠানের সভাপতি শ্রী কালীপদ সরকার মহাশয় তার সংক্ষিপ্ত বক্তব্য পেশ করেন এবং আনুষ্ঠানিক ভাবে “অবেক্ষণ” পত্রিকার রাখীপূর্ণিমা সংখ্যা প্রকাশ করেন।
এরই মাঝে উপস্থিত সকলকে বৃক্ষ প্রদান করে গয়েশপুর করুণাময়ী মিশন। মিশনের তরফে অনিমেষ বসাকের উদ্যোগে এই কর্মসূচীতে হাজির ছিল এক ঝাঁক কচিকাঁচা। তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলের হাতে একটি করে গাছের চারা তুলে দেয়।
সবশেষে “অবেক্ষণ” এর সদস্য দেবদীপ বণিক তার সুরের যাদুতে উপস্থিত সকলকে মন্ত্রমুগ্ধ করেন। গোটা অনুষ্ঠান সঞ্চালনার দায়িত্বে ছিলেন অবেক্ষণের সদস্য তথা শিক্ষক বিজয় মুখোপাধ্যায়। উপস্থিত ছিলেন অবেক্ষণ-এর প্রতিষ্ঠাতা সদস্য বিশ্বনাথ দাস এবং রাজিত কর্মকারও।
I wish Gobardanga abakkhan rakhipurnima