কান খোঁচানো বিপজ্জনক

কানে কাঠি, আমোদিত চোখ, আরামে বুঁদ। এমন ছবিটা প্রায়শই চোখে পড়ে। কেউ পরিষ্কার করার নামে, কেউ বা আরাম পেতে, কেউ কেউ আবার অযথাই কান খুঁচিয়ে থাকেন। কোনো অস্বস্তি না হলেও শুধু স্বভাবের কারণেও প্রায়ই কটন বাডস ব্যবহার করে কানে সুড়সুড়ি দিতে থাকেন অনেকেই। বাজারে কান খোঁচানোর জন্য বিভিন্ন সংস্থার কটন বাডসও পাওয়া যায়। এ রকম কান খোঁচানোর বা বাডস ব্যবহারের অভ্যাস থেকে হতে পারে বড়সড় বিপদ।

বিশেষজ্ঞদের মতে, কানে কোনো সমস্যা হলে বা ময়লা জমেছে মনে হলেই ইয়ার বাডস ব্যবহারের যে প্রবণতা রয়েছে, তা অত্যন্ত বিপজ্জনক। ইয়ার বাডস ব্যবহার করতে সব সময় বারণ করেন চিকিৎসকরা। কারণ কানের যা অ্যানাটমি বা গঠন, সে ক্ষেত্রে কানে যে ওয়্যাক্স বা ময়লা তৈরি হয়, তা চোয়ালের নাড়াচাড়াতেই বেরিয়ে আসে।

খুব কম ক্ষেত্রেই গঠনের জন্য কানের মধ্যে আটকে যাওয়ার সমস্যা তৈরি হয়। কানের সমস্যা থেকে জটিলতা বেড়ে মস্তিষ্কে প্রভাব পড়তে পারে। তাই কানে কিছু অস্বস্তি হচ্ছে মনে হলেই আঙুল দিয়ে খোঁচাখুঁচি, বাডস ব্যবহার ইত্যাদি একেবারেই করা যাবে না, বলেন বিশেষজ্ঞরা। 

কানের অতিরিক্ত ময়লা বা ওয়্যাক্স হাঁচি-কাশি-স্নান-ঘুম ইত্যাদি নানা জৈবিক কাজের হাত ধরেই বেরিয়ে যায়। আলাদা করে খুঁচিয়ে বের করতে হয় না। কারণ শরীর একটা নির্দিষ্ট ওজনের পর আর ময়লা নিজের ভেতরে রাখে না।

কেন বাডস জাতীয় জিনিস ব্যবহার করা যাবে না

  • কানের যে ছিদ্র বা গহ্বর, সেটির ব্যাস বেশ ছোট। বাডসের ব্যাস সেই তুলনায় বেশি। ফলে কানের প্রাচীরে তৈরি হওয়া ওয়্যাক্স বা ময়লা আরও ভেতরে চলে যায়। এর থেকে সংক্রমণও হতে পারে।
  • কানের প্রাচীরে আঘাত লাগতে পারে।
  • বাডস ভেঙে ভিতরে রয়ে যেতে পারে, যা মারাত্মক বিপজ্জনক।
  • বাডসের তুলো থেকে সংক্রমণ হতে পারে।
  • কটন বাডসের খোঁচানোয় প্রতিদিনই কানের অডিটরি লোবকে উত্তেজিত করে তার অভ্যন্তরীণ ক্ষতি হয়।
  • কানের তরুণাস্থিও পড়ছে বিপদে। এরা নষ্ট হয়ে দুর্বল করে দিচ্ছে শ্রবণশক্তি।
  • শ্রবণশক্তি কমলে প্রভাব পড়বে শরীরের ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রেও। কারণ শরীরের ভারসাম্য রক্ষার জায়গাটি কানেই রয়েছে।

কানে ময়লার পরিমাণ বেশি হলে যা করতে হবে

বাড়িতে আগে সর্ষের তেল ব্যবহার করা হতো। এখন অলিভ অয়েল বা জলপাই তেল দিয়ে ভিজিয়ে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয়।

সমস্যা কমবে কী ভাবে

১. অলিভ অয়েল ওয়্যাক্স জাতীয় পদার্থকে গলিয়ে দেয়, নরম করে। ফলে ময়লা বেরিয়ে যায়।

২. জল ঢুকেছে মনে হলে তোয়ালের মাধ্যমে যতটা জল মুছে নেওয়া যায়, মুছে নিন। বাকিটা ঠিক সময় মতো বেরিয়ে যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eleven − one =