তরমুজের উপকারিতা ও অপকারিতা

গ্রীষ্মকালের জনপ্রিয় একটি ফল তরমুজ। এই সময়ে বাজারে প্রচুর মেলে তরমুজ। দামেও কম, সুস্বাদু এই ফলের তাই চাহিদাও রয়েছে।  তরমুজে রয়েছে প্রচুর পরিমানে পুষ্টি, ভিটামিন এবং খনিজ। তরমুজের শতকরা ৯২ ভাগই জল এবং প্রাকৃতিক ভাবেই এতে কোনো চর্বি থাকে না। তরমুজের পটাশিয়াম শরীরে ফ্লুইড ও মিনারেলসের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে। এটি ভিটামিন এ জাতীয় ফল।

এবারে এক নজরে তরমুজের উপকারিতাগুলি দেখে নেওয়া যাক।–

১। গবেষণায় দেখা গেছে, তরমুজ আমাদের শরীরের জমে থাকা চর্বি কমিয়ে ফেলতে সাহায্য করে।

২। তরমুজ ভাসডিলেশন (vasodilation) এর মাধ্যমে রক্ত প্রবাহ উন্নত করে, ও কার্ডিওভাসকুলার এর সাথে সম্পর্কিত ফাংশনসমূহ উন্নত করে।

৩। তরমুজ হাড়ের গঠন শক্ত ও মজবুত করে। হাড়ের ক্যালসিয়াম ধরে রাখতে সাহায্য করে।

৪। নিয়মিত তরমুজ খেলে প্রোস্টেট ক্যান্সার, কোলন ক্যান্সার, ফুসফুসের ক্যান্সার ও ব্রেস্ট ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে যায়।

৫। তরমুজ ফ্ল্যাভোনয়েড (flavonoids), ক্যারটিনয়েড (carotenoids), ট্রিটেপেনইডিস (triterpenoids) এবং ফেনোলিক (phenolic)এর মতো যৌগের সমৃদ্ধ ফল। ফলে শরীরের যে কোনো প্রদাহ কমাতে সহায়তা করে।

৬। অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ তরমুজ খেলে অক্সিডেটিভ স্ট্রেস জনিত অসুস্থতা কমে যায়।

৭। আমাদের মস্তিষ্ক থেকে পা পায়ের পাতা পর্যন্ত প্রতিটি সেলকে কার্যকরি করে তোলে তরমুজ।

৮। তরমুজের ভিটামিন এ, ত্বক ও চুলের আর্দ্রতা বজায় রাখে এবং নতুন কোলাজেন ও ইলাস্টিন কোষের সুস্থতা বর্ধনে সাহায্য করে। ১১। তরমুজ এ্যাজমা, ঋতুজনিত সর্দি, টনসিল, গরম বা ঠাণ্ডা জ্বর সারায়। ১২।লাইকোপিনসহ বিভিন্ন উপাদানে সমৃদ্ধ তরমুজ খাওয়ার অভ্যাসে বার্ধক্য দেরিতে আসে। ত্বকে সহজে ভাঁজ বা বলিরেখা পড়ে না।

৯। তরমুজের বেটাক্যারোটিন চোখের জন্য উপকারী। বেটাক্যারোটিন রাতকানা প্রতিরোধেও কার্যকরী ভূমিকা রাখে।

১০। তরমুজের Citrulline একটি অ্যামিনো অ্যাসিড যা কিডনির জন্য অত্যন্ত উপকারী। এটি কিডনি ও মুত্রথলিকে বর্জ্যমুক্ত করে।

১৩।তরমুজের সিট্রোলিন নামের অ্যামাইনো অ্যাসিড যৌনশক্তি বাড়ায়।

তরমুজের নানা উপকারিতার মাঝে কিছু অপকারিতাও আছে এবার একটু চোখ বুলিয়ে নেওয়া যাক সেই সব অপকারিতাগুলির দিকেও :

১। দৈনিক ৩০ মিলিগ্রামের বেশি লাইকোপিন গ্রহণ খাদ্যে অরুচি, ডায়রিয়া, বমি বমি ভাবের কারণ হতে পারে।

২। যাদের দেহে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি মাত্রায় পটাশিয়াম থাকে তাদের দৈনিক এক কাপের অতিরিক্ত তরমুজ গ্রহণ করা উচিত নয়। অতিরিক্ত পটাশিয়াম অনিয়মিত হৃদকম্পন ও পেশির ওপর নিয়ন্ত্রণ হ্রাস এর জন্য দায়ী

তরমুজ খাওয়ার সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে একটু নজর দেওয়া যাক। –

১. গ্রীষ্মকালে প্রচণ্ড গরমে অনেকেই ঠাণ্ডা তরমুজ খেতে পছন্দ করেন। কিন্তু মনে রাখবেন, ঠাণ্ডা তরমুজ খেতে ভালো হলেও, আপনাকে সমস্যায় ফেলতে পারে। অতিরিক্ত ঠাণ্ডা তরমুজ আপনার পাকস্থলির ক্ষতি করতে পারে।

২. জ্বর, দাঁতের এলার্জি, মুখের ঘা, কিডনি ও পেটের সমস্যায় ভুগছেন—এমন মানুষ; গর্ভবতী নারী; এবং ডায়াবিটিসের রোগীদের তরমুজ খাওয়ার সময় সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত। আর নারীদের উচিত মাসিকের সময় তরমুজ এড়িয়ে চলা।

৩. একটা তরমুজ কেটে একবারে খেয়ে ফেলা উচিত। অনেকে ফ্রিজে রেখে কয়েক দিন ধরে একটা তরমুজ খান। এটা ঠিক না। এতে তরমুজের ফ্রেসনেস কমে যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

five × 5 =