বই পড়লেই শাস্তি মুকুব
ব্রাজিলে বিচার প্রক্রিয়ার দীর্ঘসূত্রতার জন্য বিচার শুরুর আগে কারাগারে কয়েক যুগও পার হয়ে যায় অনেক কারাবন্দির। তাদের কারাজীবনকে ‘অর্থবহ’ করতে বই পড়া এবং সংস্কৃতি চর্চার ব্যবস্থা করেছে সে দেশের একটি কারাগার।
সম্প্রতি দক্ষিণ আমেরিকার আরেক দেশ বলিভিয়াতে শুরু হয়েছে এমন উদ্যোগ। একটি-দুটি নয় মোট ৪৭টি কারাগারে চালু হয়েছে ‘বুকস বিহাইন্ড বার’ প্রকল্প। এই প্রকল্পের অধীনে প্রত্যেকটি কারাগারে খোলা হয়েছে লাইব্রেরি। বহু কারাবন্দির মধ্যেই শুরু হয়েছে বই পড়ার জন্য ছুটোছুটি, কারন কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন বই পড়ার ফলে কমতে পারে সাজার মেয়াদও।
বলিভিয়াতে মৃত্যুদণ্ড নেই। তবে ব্রাজিলের মতো সেখানেও বিচারপ্রক্রিয়া অতি মন্থর এবং দীর্ঘ। তাই বিচার সহজে শুরু হয় না, শুরু হলে শেষ হতে হতে জীবন পেরিয়ে যায় অনেকের। শাস্তির মেয়াদ শেষ করে মুক্ত জীবনে ফেরা যেন সৌভাগ্যের বিষয়। এই অনিশ্চিত, একঘেঁয়ে জীবনে পরিবর্তন এনেছে বই। ৪৭টি কারাগারের অন্তত ৮৬৫ জনের ‘ঘনিষ্ঠ বন্ধু’ হয়ে গেছে বই। শুধু সময় কাটানোর কথা বললে ‘বুকস বিহাইন্ড বার’ প্রকল্প হয়ত এত সফল হতো না। কারাগারে একঘেঁয়েমি দূর করার বিষয়টি তো আছেই, তার সঙ্গে বিশেষ দুটি প্রণোদনাও যোগ করেছে কারা কর্তৃপক্ষ।
অনেক কারাবন্দিই এর আগে কোনোদিন বই স্পর্শ করেছেন কি না সন্দেহ। এমনই এক কয়েদি জ্যাকুলিন জানিয়েছেন, এমন ‘নিরক্ষরদের’ জন্য ‘বুকস বিহাইন্ড বার’ প্রকল্প নিয়ে এসেছে ‘নতুন জীবন’ শুরুর সুযোগ। বর্ণমালার সঙ্গে পরিচিত হয়ে, বই পড়তে শিখে জীবনের নতুন অর্থ খুঁজে পাচ্ছেন অনেকেই। কারাবন্দিদের বিভিন্ন কাজের বিনিময়ে প্রতিদিন ৮ বলিভিয়ানো, অর্থাৎ ১.১৮ ডলার করে দেয় কারা কর্তৃপক্ষ। এখন যোগ হয়েছে বই পড়লে শাস্তি মুকুবের বোনাস। বই পড়লেই তো হবে না, পড়ে কতটা শেখা হলো তা দেখার জন্য নেওয়া হয় পরীক্ষাও। সেই পরীক্ষায় পাশ করলেও মেলে পুরস্কার।