মিনিকিট চাল: বিপদের অপর নাম
অগ্নিভ হালদার, বিশ্বভারতী, শ্রীনিকেতন ##
কথায় আছে মাছে ভাতে বাঙালী, তাই ভাত আমাদের প্রধান খাদ্য আবার আধুনিক বাঙালী ভালোবাসে ধবধবে সাদা তুলনামূলক সরু চালের ভাত খেতে দামের দিক থেকে সাধ্যের মধ্যে তুলনামূলক সাদা এবং সরু চালের কথা বললেই আমাদের মনে আসে মিনিকিট চালের কথা । চালের কেনাবেচার শীর্ষে থাকা নামটি হল মিনিকিট। কিন্তু এই নামে আসলেই কোন ধানের জাত নেই ।
তাহলে ব্যাপারটা কি? আসুন এ ব্যাপারে একটু আলোকপাত করার চেষ্টা করা যাক।
এই মিনিকেট চালের উৎস খুঁজতে গিয়ে দেখা গেছে যে সাধারণ মোটা চালকে ইচ্ছামত পালিশ ও ছাঁটাই মাধ্যমে সাদা ঝকঝকে ও চিকন রূপ দান করে মিনিকিট নামে বাজারে বিক্রি করা হয়। এক্ষেত্রে চালের 25 থেকে 30 শতাংশ পর্যন্ত ছাঁটাই করা হয়ে থাকে (অনুমোদিত 10 শতাংশ )।
মিনিকিট আসলে কি?
মিনিকিট কথাটি এসেছে মিনিকেট ট্রায়াল থেকে। একটি ব্রিডিং লাইনকে নতুন উন্নত জাত হিসেবে প্রস্তাব দেওয়ার আগে তার সমকক্ষদের তুলনায় উন্নত প্রমান করতে একাধিক পরীক্ষার মুখোমুখি করা হয়। তার একটি হল মিনিকিট ট্রায়াল। সহজ ভাষায় বললে, নতুন আবিষ্কৃত কৃষিজ বস্তু (পদ্ধতি,বীজ এবং প্রযুক্তি) যা ট্রায়ালের জন্য সামান্য পরিমাণে চাষীদের মধ্যে বিতরণ করা হয় এবং তার ফলাফল দেখা হয়।
ভারত সরকার এই মিনিকিট ট্রায়ালের আন্ডারে 1972 সালের শুকনো মৌসুমের আগে পুরো দেশ জুড়ে বহু কৃষক কে দু কেজি করে ট্রায়াল (unreleased variety) জাতের ধানের বীজ দিয়েছিল। পরবর্তী বছরগুলিতে দুই কেজি ধানের বীজের সঙ্গে আরো কিছু সামগ্রী(যেমন সার, রোগনাশক ইত্যাদি) প্রদান করা হয়েছিল যাদের একসাথে বলা হত মিনি–কিটস । একই ভাবে পরবর্তীকালে ধান ছাড়াও গম এবং তৈল বীজেরও দু কেজির প্যাকেট সরকার কৃষকদের প্রধান করেছিল।
এই চালের বিপদ কি ?
পালিশ করা এই চালে খাদ্যগুণ অর্থাৎ মিনারেল, ভিটামিন, ফাইবার, প্রোটিন অ্যান্টি-অক্সিডেন্ট কিছুই আর অবশিষ্ট থাকে না। স্বাভাবিকভাবেই পুষ্টিহীন এই চালের ভাত খেতে অভ্যস্ত হয়ে পড়লে কোলন ক্যান্সার ও ডায়াবেটিস এর মতন মারনরোগের ঝুঁকি বেড়ে যায় । এছাড়াও রক্তচাপ বৃদ্ধি, অতিরিক্ত মোটা হয়ে যাওয়া এবং বাধ্যক্য দ্রুত আসতে পারে বলে সতর্ক করেছেন কৃষি বিজ্ঞানীরা ।
তথ্যসূত্রঃ
Subrata Garai,Research Scholar , IARI, New Delhi
Miniket Rice: What Is It and Why Is It? Jiban Krishna Biswas