রথযাত্রা (ঠুঁটো জগন্নাথ)

সুপ্রীতি বর্মন, বর্ধমান

##

বেনীমাধব খুব দুঃখী ঘরের ছেলে, নুন আনতে পান্তা ফুরায়। সংসারের দৈন্যদশা। সবসময় বুকের দোষে ভুক্তভোগী বাপের মুখ ঝামটা। জোয়ান ছেলের চোখের তলায় গুমড়ে মরে স্বপ্ন দীর্ঘ প্রতীক্ষা সুদিনের কালি। তবুও তার মনের জোর ঠেলা গোঁজা সংসারে ফোটায় চন্দ্রমল্লিকা, সবসময় মনে তার প্রেমিক স্বত্তা। নায়কের চিত্রপটে হিরোগিরি কিষেন কানাইয়া।

ওদিকে জুঁই স্বচ্ছল আটপৌরে কুমারী তার রূপ যৌবনে মরি মরি রাস্তার ছেলে ছোকরার দল।তবুও তার মন শুধায় তারে এমন কে আছে যে মরবে তার মনে, তার দেহে নয়। আশেপাশে পেরিয়ে যাওয়া মেয়েরা তাদের প্রেমিকের বাইকের পেছনের সিটে কোমর জড়িয়ে দেয় দূর গন্তব্য যাত্রা। জুঁই মনে মনে দীর্ঘশ্বাসে লুকায় অন্তরের গুমোট যন্ত্রনা কিন্তু কে সেই মনের মানুষ হবে।

হঠাৎ একদিন এই দুই পৃথিবীর সম্মুখ দর্শনে বেনীমাধব পাগল হয়ে উঠে জুঁই এর রূপে। রাস্তা ঘাটে পাগলের মতন তার পিছু করে। চোখে অনেক প্রশ্ন কৌতূহলের মাকড়সার জাল তার ঘুম কাড়ে। ন্যাওটা ছেলের মতন গা ঘেঁষে তার যোগাযোগ পেতে চায়। কোন একটা সূত্র যাতে গাঁথা হবে হৃদয় সাঁকো। জুঁই এর স্বেচ্ছায় সমর্পন গড়ে উঠে সখ্যতা। দিবারাত্রির কাব্য ফোনেই রতির জীবন যাপনচিত্র।

জুঁই এর মা বলে আবার এসে গেলো সেই আষাঢ়ের রথ। রথের রশি ধরে টানাটানি করো। আর ঠুঁটো জগন্নাথ দিনরাত শুধু বসে থাকো চূড়ায় আর ফ্যাল ফ্যাল করে চেয়ে থাকো মানুষের দৈন্যদশায়। জুঁইয়ের চোখের কোনে জল আমার বেনীমাধবটা ও দুবেলা ভালোমন্দ জোটে না আর আমি বসে বসে আলালীর ঘরে দুলালী পাকা মাছের কাঁটা বেছে বেছে খাবো। হা ঈশ্বর এ তোমার কেমন বিচার।

জুঁই বলে আচ্ছা মা ঠুঁটো জগন্নাথ বললে কেন এটা কি কোন প্রবাদ। মা বলে তুই এটাও জানিস না। রাজনের একটা ভুলের অপরাধে এই মাশুল। মানে মা বলো বলো সেই গল্পটা। দূর ছাড় আমায় অনেক কাজ বাকি আছে রান্না করতে হবে। জুঁই বলে আজকে তোমাকে বলতেই হবে কি হয়েছিল। মা বলে বোকা মেয়ের কান্ড দেখো, ঠিক আছে বলছি মন দিয়ে শোন।

সে অনেককাল আগের কথা শ্রীকৃষ্ণের স্বেচ্ছায় দেহত্যাগের পর তার প্রানের পরশ নীলকান্তমনি হয়ে ভাসিয়ে দেওয়া হয় যমুনার জলে। তারপর পুরীর রাজা স্বপ্ন পায় জগন্নাথের মন্দির নির্মানের আলংকারিক সৌন্দর্যে। তার জন্য রাজার অনেক কঠোর তপস্যায় মন থেকে ডাকে দারুব্রহ্ম কাঠ ভেসে আসে সমুদ্রের সৈকতে। রাজার আর আনন্দ ধরে না পরব্রহ্ম তাকে খুঁজে নিয়ে জগৎ শ্রেষ্ঠ কাজের দায়িত্ব দিয়েছেন। স্বয়ং বিশ্বকর্মা আসেন সেই মূর্তি নির্মানের কান্ডারী হতে। কিন্তু প্রথমেই সতর্কতা দেন রাজন আমার মূর্তি তৈরী করা কালীন কেউ যেন মন্দিরে প্রবেশ না করেন। কিন্তু রাজার বড্ড স্বভাবদোষ তর সয়না। প্রচন্ড অধৈর্য্য হয়ে পড়ে ভাবে দূর… দিন মাস বছর সব গেল শিল্পী কি করছে কি এতদিন ধরে। তাছাড়া মূর্তি নির্মানের কোন ঠোকাঠুকির আওয়াজ নেই। দূর আর পারছিনা দরজাটা খুলেই দি। ব্যাস যেমন বলা তেমনি কাজ দরজাটা হাট করে সশব্দে খুলে দিল। আর ধড়মড়িয়ে উঠলো বিশ্বকর্মা। ব্যাস সমগ্র কাজ পঙ্গু।

জুঁই বললো মা তার মানে। মা বলল বিশ্বকর্মা স্তম্ভিত হাত থেকে হাতুড়ি পড়ে গেল। রাজার চক্ষু চড়কগাছ। দেখে জগন্নাথ, বলরাম, সুভদ্রা কারোর হাত পা গড়া হয়নি। সেই থেকে ঠুঁটো জগন্নাথ। বিশ্বকর্মা বললো আর হবে না পারবো না করতে আপনি আমার আদেশ মানেন নি। রাজন বললো দয়া করে আপনি চলে যাবেন না। কিন্তু কি আর করার চোখের জল সার।

তাই বলে ধৈর্য্য ধরে সময়ের কাজ সময়ে না হলে অরণ্যে রোদন।

জুঁইয়ের মনে এই কথাটা ধাক্কা মারে জোরে। আমি এক কুমারী কেই বা দেখেছে আমার ভবিতব্য। তাই সময় থাকতে থাকতেই বেনীমাধবকে জানাতেই হবে আমি ওকে কতটা ভালোবাসি। দৌড়ে চলে যায় ঘরে। মা তার কিছুই বুঝতে পারে না। বলে কে জানে কি হল হঠাৎ করে ওর। পাগলী মেয়ে একটা। কখন যে মাথায় কি ভূত চাপে তা বোধ করি বিধাতারও জানা নেই।

জুঁই ছুটতে ছুটতে ঘরে ঢুকে ফোনের নম্বর মেলায়। হাঁপিয়ে উঠে আর স্যাঁতসেঁতে অন্তর্বাস বলে হ্যালো শুনছো আমি তোমার জুঁই। বেনীমাধব বরাবরই একটু ভীতু আর ঘরকুণো তার বুকের ভেতরটা ভয়ে মুচড়ে উঠে বলে কি হয়েছে জুঁই কিছু ঘটেছে।

জুঁই হাসতে হাসতে বলে দূর পাগল। জানোনা সামনেই আষাঢ়ের রথ। এবারে খুব ঘটা করে আমাদের গ্রামের যে প্রাচীন পরিত্যক্ত জীর্ণ মন্দির আছে ওখানে হবে। মেলা বসবে সরগরমে প্রাঙ্গন জুড়ে। আমাকে নিয়ে যাবে ঘোরাতে বল না প্লীজ। আমার তো আর কেউই নেই কে যাবে তাহলে। বেনীমাধব বলে আমি আছি তো। বলেছি না সারাজীবন আগলে রাখবো তোমাকে আমার বুকে আর শক্ত করে তোমার হাতটা ধরে রাখবো। জুঁই খুব খুশী তার ভেজা আঁখির কুমারী প্রেম আজ সার্থকতা পেল তোমার স্বীকারোক্তির ছোঁয়ায়।

জুঁই বলল বেশ আমি তাহলে সেজেগুঁজে তোমার মনের মতন প্রেমিকা হয়ে অপেক্ষা করবো মন্দিরের দরদালানে। ঠিক আছে বলে বেনীমাধব ফোন ছেড়ে দেয়। কতকাল পরে একটু নিজের জন্য তার বাঁচার ইচ্ছা হল। সবসময় নেই নেই রুদ্ধশ্বাস কানাকড়ির দূর্মুল্যের সংসারে তিষ্ঠানো দায়। আজ একটু তার প্রানখোলা হাসি আর ঘোলাটে হবে না কেরোসিনে স্টোভের ধোঁয়ায় বা ভাতের হাঁড়ির ক্ষিধের আগুনে।

বেনীমাধব পরিপাটি সেজে সানগ্লাসে হিরোয়িক লুকে লোমশ বুকের ছাতিতে ডেনিমের আঁচে প্রেমিক ভ্রূন প্রস্ফুটিত হব হব করছে। তারপর এক দৌড়ে সাইকেল নিয়ে বেরিয়ে যেতে যেতে ভাঙা দরজা দিয়ে গলে যেতে গিয়ে বলে মা বেরোচ্ছি কাজ আছে একটু। পায়ের জুতার সোলটা বড্ড খরখরে পা কেটে গলে যাবার উপক্রম, আসলে কম দাম তো। বলে না সস্তার শত অবস্থা। কিন্তু কি আর করার আমার গ্রাভিটি তো ঐ বুটে ঐটাতেই আমার পুরুষত্ব। খুলে ফেলতে পারিনা। এক বিশাল Complex.

আজানুকেশ ভিজিয়ে জুঁইয়ের জলকেলি পায়ের কলমে বৃত্তাকারে আলপনার আঙ্গিকে মনে মনে ছুঁই তোমার কায়া বেনীমাধব তুমি শুধু আমার। তারপর স্নানঘর থেকে বেরিয়ে এসে দর্পণে নিজেকে দেখে আর ভাবে যদি মায়ের মতন একটু তোমার গোলাপ ওষ্ঠের লালিমা দিয়ে সিঁদুরে রাঙাতে পারতাম আমার সিঁথি কিন্তু সে তো অসম্ভব কারন আমি তো দিনের শেষে এই ঘরের অক্ষতযোনি।

তারপর মিলনের পরাগমাধুরী মিশিয়ে জুঁই বসে বসে একটি মালা মন দিয়ে গাঁথতে বসে ফুল দিয়ে। সেটা তারপর যত্ন করে ব্যাগে রাখে। তারপর সেজে মাকে বলে আমি আজ রথের মেলায় যাচ্ছি তাড়াতাড়ি ফিরে আসবো। তুমি কিছু চিন্তা করোনা।

জুঁই বেরোয় তারপর হেঁটে হেঁটে পৌঁছায় অবশেষে অনেকটা পথ অতিক্রম করে মন্দিরের জীর্ণ পরিত্যক্ত প্রাঙ্গনে। কত বিশাল ভিড় রীতিমতন চাপাচাপি। জুঁই ভাবে জগন্নাথ মানুষের কত কষ্ট আর নেকন তোমার ছোঁয়া পেতে রসা নিয়ে দড়াদড়ি সেই সকাল থেকে। তোমার কাছে মন্দিরের চূড়ায় বসে থাকা পুরোহিত ভাবে সে তোমার। আর নীচে যে দড়ি টানে সে ভাবে তুমি তার। কিন্তু দিনের শেষে যতই ধ্বস্তাধস্তি হোক জগন্নাথ তুমি হাসো আর ভাবো আমি জানি আমি কার।

এইসব সাতপ্যাঁচ নিয়ে ভাবছে জুঁই আর বলছে মনে মনে কে জানে বেনীমাধবটা এতো দেরী করছে কেন।চোখ বন্ধ করে ডাকছে জগন্নাথ আমাকে আর একাকীত্বের বৃশ্চিক দংশন দিওনা।ওকে তাড়াতাড়ি আমার কাছে পাঠিয়ে দাও।ঐ আমার প্রানের সখা।আমার সবকিছু।

হঠাৎ চোখ খুলতেই দেখে চোখের সামনে ছুটতে ছুটতে আসছে বেনীমাধব খালি পায়ে ভাঙা সাইকেলে। হুড়মুড়িয়ে নেমে জুঁইয়ের সামনে দাঁড়িয়ে বলে যেন আজকে জুঁই মরতে মরতে বেঁচেছি। জুঁইয়ের বুকটা ধড়াস করে ওঠে বলে কেন কি হয়েছে বলো তোমার। বেনীমাধব বললো আর বলবে না জুতোটা প্রথম থেকেই পায়ে adjust হচ্ছেনা। খুব ধকল দিচ্ছে প্রচন্ড যন্ত্রনা তাই মনটা ঐটাতেই আটকে আছে আর মাথায় একটা চাপ যে তাড়াতাড়ি তোমার কাছে পৌঁছাতে হবে। ব্যাস জোরে সাইকেল চালাতে গিয়ে প্রায় একটা লরির তলায় চলে যাবার উপক্রম। মরে গেলেই ভালো হতো ঘরের একটা চাপ শেষ হতো। ঘাড় থেকে বোঝা নেমে যেতো। কত টাকাই বা রোজগার করি আমিও তো তোমার ভগবানের মতন ঠুঁটো জগন্নাথ। তাই জানি তুমি আমার। তুমি আমার পোষাক বা জুতোয় কোনরূপ মাথা ঘামাবে না। কারন তুমি এই রক্তমাংসের মানুষটাকে ভালোবাসো তাই না। তাই জুতো খুলে ছুঁড়ে ফেলে দিয়েছি নগ্ন পায়েই তোমার কাছে ছুটে এসেছি। বলো জুঁই ঠিক করিনি আমি।

জুঁই একেবারে পাথরসম তার চোখ দিয়ে অনর্গল অশ্রু বিসর্জন। কোন সাড়া দিচ্ছেনা। নিরুত্তর। বেনীমাধব তাকে জোরে জোরে টানাটানি করে তার পিঠ ও ব্লাউজের দিকে আঁকড়ে ধরে জুঁই সাড়া দাও কি হলো তোমার বলো বলো,,,,,, জুঁই তখন জাপটে ধরে বেনীমাধবের বুকে তার বুক দুটো শরীর মিলে মিশে একাকার বলে বলো আর কোনদিন আমাকে একলা ছেড়ে চলে যাবে না। আমি আবার একলা হয়ে যাবো। মরে যাবো।

তার হাত থেকে মনের অগোচরে জুঁইয়ের মালাটা পড়ে যায়। তারপর জোর বৃষ্টি নামে মুষলধারে। সব রথের রশি ধরে টানাহিঁচড়া থেমে যায়। ছত্রভঙ্গ হয়ে যায় দল যে যেদিকে পারে পালায়। ভগবানের আসনে শুধু স্মিতহাস্যে জগন্নাথ। ঐদিকে জুঁই ও বেনীমাধব যেন রাধা কৃষ্ণের যুগলমূর্তি আর মাথার উপর ঝরছে পুষ্পবৃষ্টি কারন একটি মহীরুহের পাশেই ছিল এই কপোত কপোতী।

বেনীমাধব আর ঠুঁটো জগন্নাথ থাকতে চায়না অনেকবার নিজের মনে একটা মর মর চাপা ভয়ে সে পিছিয়ে গেছে জুঁইকে কাছে না টেনে তার প্রস্তাবকে নাকচ করে সরিয়ে রেখেছে নিজেকে। কিন্তু আজ আর নয়। সেই আকাঙ্খিত মধুমালতী এসেছে আমার পুরুষত্বের বাহুডোরে। বেনীমাধব জুঁইকে কোলে নিয়ে ঢুকে যায় পরিত্যক্ত ভাঙাচোরা দেওয়ালের মধ্যিখানের ঘুপচি কুঠুরী গুলোতে। ঐদিকে প্রধান মন্দিরের অন্তঃপুরে পর্দার আড়ালে নৈবেদ্যের উপাচারে জগন্নাথের ভোগ চলছে।

পুরোহিতরা বৃষ্টির মধ্যেও চান জলের থালার সামনে কোষাকুষি নিয়ে সাগ্রহে প্রতীক্ষায় করপদ্মে তুলে দেবে বলে।

দ’ য়ের মধ্যভাগে প্রবল বর্ষণে আদম কামড়ে কামড়ে ক্ষুধা চরিতার্থ করে। প্রকৃতি অস্থির উন্মাদনায় দুটি নিষ্পাপ ওষ্ঠে ঝড় লুকিয়ে আছড়ে পরে আত্মার মই বেয়ে সহাবস্থান। নাভিতে জলজ উল্কি ফোঁটা ফোঁটা তোমার ঘামের প্রচ্ছদের ক ফোঁটা। তারপর একেবেঁকে বাসি সর্বনাশ ময়াল সাপের প্যাচঁপেচে অন্ধত্বে শীতলতার ঘুম।

জুঁইয়ের কপালে বেনীমাধব তার স্বামীর সাক্ষর চুমু দিতেই জুঁই কেঁদে কেঁদে কম্পিত শরীরে তাকে জড়িয়ে ধরে আরো শক্ত করে। বেনীমাধব দেখে পাশে পড়ে আছে মালাটা। জুঁইয়ের কিছু বলার আগেই সে সবটুকু বুঝে যায় তারপরই সে আগুপিছু কোন চিন্তাকে মাথায় ঠাঁই না দিয়ে মালাটা জুঁইকে পরিয়ে দেয় আর তাকে আলিঙ্গন করে বলে জুঁই জানো তো আর একটা ছোট্ট জিনিস বাকি আছে করতে। জুঁই বলে সেটা আবার কি। কোন দুষ্টুমি নিশ্চয় আমি জানি তো।

বেনীমাধব বলে আরে না পাগলী তারপর সটান নিজের জামার পকেট থেকে সিঁদুর কৌটো বের করে এক চিলতে সিঁদুর নিয়ে পরাতে যায় জুঁইকে। কিন্তু জুঁই ভয় পেয়ে তার হাতটা শক্ত করে ধরে বলে এ কি করছো। যা করছো ভেবেচিন্তে করছো তো। এটা কিন্তু একবার দেয়। বেনীমাধব বলে আমি জানি তুমি শুধু আমার। কবে থেকে বৈরাগ নিয়েছি সংসারের কথা ভেবে কিন্তু আর পারছিনা। আমি মন থেকে তোমাকেই আমার বউ বলে ভাবি। জুঁই মাথা পেতে নেয় বেনীমাধবের সিঁদুর। আজ থেকে আমি শুধু তোমার।

তারপর দুজনে মেলায় বেরিয়ে এসে ঘোরাফেরা করে জুঁই আবার সেই ছোট্ট মেয়েটি হয়ে বেনীমাধবকে বায়না করে। দাও না এটা কিনে ওটা কিনে। তারপর জুঁইকে টেনে নিয়ে আসে আর দুহাত ভর্তি রেশমী কাঁচের চুড়ি পরিয়ে দেয়। জুঁই বলে তুমি কি করে জানলে আমি চুড়ি পরতে খুব ভালোবাসি।

তারপর দুজনে ছুটে এসে রথের রশি ধরে জোরে জোরে টানতে থাকে দুদিক থেকে। জুঁই মনে মনে বলে হে ঠাকুর যদি আমি কিছুটা পূণ্যি করে থাকি তাহালে সেটা বেনীমাধবকে দিয়ে দাও। ওর জীবনে রথের গতি আসুক আর স্বয়ং তুমি হও তার কান্ডারী। জুঁই হাসে আর ভাবে বেনীমাধবের আর আমার পাল্লায় পড়ে ঠুঁটো জগন্নাথ হওয়া হলো না।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four × 4 =