স্মার্ট ফোনের কিছু ঝুঁকিপূর্ণ অ্যাপ

স্মার্টফোনে আমরা বিভিন্ন ধরনের অ্যাপ ইনস্টল করি। এর মধ্যে কিছু অ্যাপ প্রয়োজনীয়, কিছু অ্যাপ অপ্রয়োজনীয়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ফোনে অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ রাখা ক্ষতিকর। ব্যক্তিগত তথ্যের সুরক্ষা কিংবা ফোনের স্টোরেজ খালি রাখার জন্য এই পরামর্শ মেনে চলা সব বয়সের মানুষের জন্য অপরিহার্য। ৫ রকমের ঝুঁকিপূর্ণ অ্যাপ সম্পর্কে জেনে নিন, ভবিষ্যতে সতর্ক হোন।

তথ্য হাতিয়ে নেয় এমন ব্রাউজার

বিভিন্ন জরিপ, বিশ্লেষণ ও গবেষণায় পাওয়া গেছে, ইন্টারনেটে ব্যবহারকারী অনেক ব্রাউজার ব্যবহার করেন যেগুলো সরাসরি স্মার্টফোনের আইএমইআই ও আইএমএসআই নাম্বার ট্র্যাক করে ফেলে। ফলে অটোমেটিক আপনার লোকেশন ও সার্চ হিস্টোরি ট্র্যাক হয়ে যায় এবং বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান আপনার তথ্য চুরি করে। পরবর্তীতে আপনার সার্চ অপশনে কেবল ওই প্রতিষ্ঠানগুলোর বিজ্ঞাপনই আসতে থাকে। ব্যক্তিগত তথ্য সুরক্ষিত রাখার জন্য এই অ্যাপ ডিলিট করে দেওয়া বুদ্ধিমানের কাজ। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, ব্রাউজার হিসেবে গুগল ক্রোম ব্যবহার করা অধিক নিরাপদ।

অপ্টিমাইজেশন অ্যাপ

স্মার্টফোনের জন্য আরেকটি ক্ষতিকর অ্যাপ হলো অপ্টিমাইজেশন অ্যাপ। অর্থাৎ র‌্যাম বুস্টার, র‌্যাম ক্লিনার, ব্যাটারি সেভারসহ নানা ধরনের অপশন এর মধ্যে রয়েছে। এর কারণে ফোনের স্টোরেজ নষ্ট এবং পারফরমেন্স ও ব্যাটারি চার্জ বেশি খরচ হয়। তাছাড়া যে অপশনগুলো ইতোমধ্যে ফোনে দেওয়া রয়েছে, সেগুলোর জন্য আলাদা একটি অ্যাপ ব্যবহারের প্রয়োজন হয় না। ফোনে ব্যাটারি সেভার, র‌্যাম বুস্টার, র‌্যাম ক্লিনার অপশনগুলো দেওয়া থাকে। তা সত্ত্বেও আপনি যদি এই ধরনের অপ্রয়োজনীয় অ্যাপ ব্যবহার করেন তাহলে ফোনের স্টোরেজ নষ্ট হয়ে যাবে। একই সঙ্গে এমন অ্যাপ সবসময় ব্যাকগ্রাউন্ড রান করে। ফলে ফোনের গতি কমে যায়। তাই শুধু শুধু এই অ্যাপ ব্যবহার করে ফোনের চার্জ ও পারফরমেন্স নষ্ট করা অর্থহীন।

থার্ড পার্টি অ্যাপস

কখনও কখনও গুগল প্লে-স্টোরে অ্যাপ পাওয়া যায় না অথবা তার ফ্রি-ভার্সন থাকে না। এমন অবস্থায় থার্ড পার্টি অ্যাপ ব্যবহার করেন অনেকে। থার্ড পার্টি অ্যাপ হলো গুগল ক্রোম বা অন্য কোনো ব্রাউজারের মাধ্যমে ওয়েবসাইট থেকে এপিকে ফাইল ডাউনলোড আমরা ফোনে ইনস্টল করি। অজানা ওয়েবসাইট থেকে এপিকে ফাইল ডাউনলোড ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ এর সঙ্গে ম্যালওয়্যার অথবা ভাইরাস আপনার ফোনে চলে আসতে পারে। তবে গুগল প্লে-স্টোরের বাইরে সব ওয়েবসাইটই ঝুঁকিপূর্ণ নয়। থার্ড পার্টির ওয়েবসাইট থেকে অ্যাপ ডাউনলোডের সময় ব্যবহারকারীর সতর্ক থাকা উচিত। ভেবেচিন্তে সেখান থেকে অ্যাপ ডাউনলোড করা বিচক্ষণ মানুষের কাজ।

অ্যান্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার

গুগল প্লে-স্টোরে একাধিক অ্যান্টি-ভাইরাস সফটওয়্যার থাকে। সেগুলো ব্যবহারে ঝুঁকি নেই। তবে অজানা ওয়েবসাইট অথবা অ্যাপ থেকে এপিকে ডাউনলোডের পর স্মার্টফোনে অ্যান্টি-ভাইরাস ব্যবহার বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। কারণ এর সঙ্গে সঙ্গে আপনার ফোন ম্যালওয়্যার বা ভাইরাস আক্রান্ত হতে পারে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, অ্যান্টি-ভাইরাস ব্যবহারের প্রয়োজন হলে ‘পেইড’ ভার্সন ব্যবহার করা উচিত। সেক্ষেত্রে ভালো একটি অপশন হলো প্লে-প্রোটেক্ট অ্যাপ। গুগল প্লে-স্টোরে সার্চ দিয়ে এটি ইনস্টল করতে পারেন। এর মাধ্যমে মাঝেমধ্যে ফোন স্ক্যান করতে থাকলে ম্যালওয়্যার ও ভাইরাস থেকে সুরক্ষিত থাকা সম্ভব।

ফাস্ট চার্জিং অ্যাপ

স্মার্টফোনে কখনোই ফাস্ট চার্জিং অ্যাপ ব্যবহার করা যাবে না। এই ধরনের অ্যাপ দাবি করে থাকে, এ ধরনের অ্যাপ ইনস্টল করা হলে ফোনের চার্জ বেশিক্ষণ থাকবে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, ফাস্ট চার্জিং ফোনের হার্ডওয়্যারের সঙ্গে সম্পর্কিত। অর্থাৎ আপনার ফোনে এই অপশন থাকলে কিংবা ফোনের ব্যাটারি যদি ফাস্ট চার্জ সাপোর্ট করে, কেবল তখনই এই অ্যাপ ব্যবহার করতে পারবেন। যেসব ফোনে এই সুবিধা রয়েছে, সেসবের ব্যবহারকারীরা ফাস্ট চার্জের অ্যাডাপ্টর ব্যবহার করেন। পক্ষান্তরে আপনার ফোনে এই সুবিধা না থাকলে কোনও অ্যাপের মাধ্যমে এটি ব্যবহার করা ঠিক নয়। কারণ যেসব অপশন বা ফিচার হার্ডওয়্যারের সঙ্গে সম্পর্কিত সেগুলো অ্যাপ ব্যবহার করে পাবেন না। তাই ফোনে এমন অ্যাপ না রাখাই ভালো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

7 − 4 =