নীল শহরের ইতিকথা

 

আকাশ বুঝি নেমে এসেছে এই শহরে। বাড়ি, ঘর, দরজা, জানালা, শহরের সবকিছুই নীল। দেখলে মনে হয়, কেউ বুঝি আপন মনে নীল রঙে রাঙিয়ে দিয়েছে মেক্সিকোর শেফচাওয়েন শহরটিকে। উত্তর মরক্কোর ছোট্ট এই শহরটির সৌন্দর্যকে তার নীলের মহিমায় কয়েক গুণ বাড়িয়ে দিয়েছে।

নীল রঙের এই শহরটিকে ঘিরে রয়েছে বহু ইতিহাস। ইহুদিরা বিশ্বাস করত আকাশের রং যেহেতু নীল, তাই স্বর্গের রংও নীল। ১৯৩০ সালে ইহুদিরা যখন এই শহরে আসে, বাড়ির দেওয়াল নীল রঙে রাঙিয়ে দেয়। আজও সেই শহরের প্রত্যেকটা বাড়ি ও বাড়ির দেওয়াল নীল রং করা। এক সময় এ শহরটি ছিল মূলত সাদা রঙের। প্রথমে মাত্র একটি এলাকা নীল রঙ করার রেওয়াজ ছিল। সেটি হলো পুরনো ইহুদি পাড়া। তবে এখন পুরো শহরটিতে বছরে তিনবার নীল রঙ করা হয়।

যদিও এই নীল রঙের পিছনে স্থানীয়দের অন্য মত রয়েছে। তাদের মতে, নীল রঙের কারণে মশার উত্‍পাত থেকে সুরক্ষিত শহরবাসী। পর্যটকদের কাছে আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে নীল রঙের শহরটি।  বাড়িগুলির দেওয়ালের রঙ নীল হওয়ার কারণ যাই হোক না কেন, বাড়িগুলির নীল দেওয়াল পর্যটকদের আকৃষ্ট করে। পর্যটকরা এইসব বাড়ি-ঘরের সরু রাস্তা দিয়ে হাঁটতে পছন্দ করে আর ক্যামেরায় তুলে নেন চমৎকার দৃশ্যগুলি।

পাথরের ধাপ কেটে সরু সিঁড়িপথ, শহরের মাঝখান দিয়ে বয়ে যাওয়া সরু রাস্তা, নীল রঙে রাঙা ঘরের দেওয়াল, সবকিছুই ছবির মতো। শুধু রঙিন নয়, বেশ পরিপাটি করে সাজানো সকলের বাড়ি। কোথাও আবার বাড়ির দেওয়ালে সুন্দর কারুকার্যও দেখতে পাওয়া যায়। প্রায় চল্লিশ হাজার মানুষের বাস এই শহরে।

তবে বাড়িগুলির সদর দরজায় কারুকার্য থাকলেও জানালাগুলো খুব ছোটোখাটো। অনেকটা ঘুলঘুলির মতো দেখতে। শুধু আকাশটাই নয়, এখানে সবকিছুই নীল রঙে মাখা। সৌন্দর্যের টানে প্রতিদিন হাজার হাজার পর্যটক শহরটিতে ভীড় জমান।

 

 

 

 

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

17 − sixteen =