লিচুর গুনাগুণ

এই সময়ে বাজারে যে ফলগুলি মেলে তার মধ্যে অন্যতম হল লিচু। সুমিষ্ট রসালো এই ফলটি আট থেকে আশি সকলেরই খুব প্রিয়। লিচু কিন্তু বেশ উপকারী ফলও।

লিচুর পুষ্টিগুণ

পুষ্টিগুণের দিক থেকে এতে আছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন ‘সি। ক্যালসিয়াম দরকার হয় হাড়, দাঁত, চুল, ত্বক, নখ ভালো রাখতে। হিসাব করে দেখা গেছে, ১০০ গ্রাম লিচুতে থাকে শর্করা ১৩.৬ গ্রাম, ক্যালরি ৬১, ক্যালসিয়াম ১০ মিলিগ্রাম, লৌহ ০.৭ মিলিগ্রাম ও ভিটামিন ‘সি’ ৩১ মিলিগ্রাম। ১০০ গ্রাম লিচু বলতে মাঝারি আকারের প্রায় ১০টি লিচুকে বোঝায়। মার্কিন ওষুধ প্রশাসন বিভাগ বলছে, প্রতি ১০০ গ্রাম লিচুতে ৬৬ কিলোক্যালরি শক্তি ও ১৬ গ্রাম শর্করা রয়েছে। চর্বি একেবারেই নেই। আরও আছে ৭১ মিলিগ্রাম ভিটামিন ‘সি’, ১৭০ মিলিগ্রাম পটাশিয়াম, ১৪ মাইক্রোগ্রাম ফলেট এবং সামান্য পরিমাণ (১মিলিগ্রাম) সোডিয়াম।

উপকারিতা

১. ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য লিচু খাওয়া অনেক ভালো কারণ এতে ক্যালরির পরিমাণটা বেশি।

২. লিচু দেহের শক্তি বাড়ায়, কারণ এটি শরীরে ফ্লুইডের পরিমাণ বাড়ায়।

৩. লিচুতে ভিটামিন ‘সি’-এর পরিমাণ কমলা লেবুর তুলনায় ৪০ শতাংশ বেশি।

৪. এই ফলটিতে আনস্যাচুরেটেড ফ্যাটি এসিড রয়েছে।

৫. লিচু বিটা ক্যারোটিনসহ প্রয়োজনীয় ভিটামিন শোষণে সহায়তা করে।

৬. এটি হজমে সহায়তা করে,কারণ লিচুতে আছে কার্বোহাইড্রেট ও ফাইবার।

৭. লিচুতে বিটা ক্যারোটিনও পরিমাণ গাজরের তুলনায় তুলনায় বেশি।

৮. লিচুতে থাকা ক্যালসিয়াম হাড়, দাঁত, চুল, ত্বক, নখ ভালো রাখতে সাহায্য করে।

৯. এটি ত্বক ও চুলের পুষ্টি জোগায়।

১০. এতে রয়েছে নিয়াসিন ও রিবোফ্লাভিন নামক ভিটামিন ‘বি’ কমপ্লেক্স।

১১. লিচুর ভিটামিন ‘এ’ রাতকানা কর্নিয়ার অসুখ, চোখ ওঠা, চোখের কোনা ফুলে লাল হয়ে যাওয়া দূর করে।

১২. লিচুতে থাকা পটাসিয়াম এবং খনিজের মতো উপাদান হূদরোগের ঝুঁকি কমায়। রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখে ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে।

১৩.এটি মস্তিষ্ক বিকাশেও সহায়তা করে। এছাড়া আমাদের হার্ট সুরা করে, স্ট্রোকের ঝুঁকি কমায়।

১৪. এছাড়াও লিচু ক্যান্সার থেকে মানবদেহকে দেয় সুরক্ষা। এটি ক্যান্সার তৈরিকারী কোষ ধ্বংস করে। এতে অবস্থিত ফ্ল্যাভনয়িডস বা ভিটামিন ‘পি’ স্তন ক্যান্সার প্রতিরোধ করে।

পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো

* মাত্রাতিরিক্ত লিচু খেলে রক্তচাপ অস্বাভাবিকভাবে কমে যেতে পারে।  
* লিচু ওজন বৃদ্ধি করে।
* লিচুতে প্রোটিন, ক্যালসিয়াম, জরুরি ফ্যাটি এসিড নেই। ফলে বেশি পরিমাণে লিচু খেলে তা শরীরের স্বাভাবিক ব্যালেন্স নষ্ট করে।
* খালি পেটে লিচু খেলে শরীরে বিষক্রিয়া হতে পারে।
* রক্তের গ্লুকোজ কমে যায়।

তাই খেতে সুস্বাদু হলেও ইচ্ছেমত লিচু খাওয়ার সুযোগ নেই। দিনে ১০-১২ টি লিচু খাওয়া যেতে পারে।  বয়স, শরীর, অসুস্থতা ইত্যাদি বিষয় বিবেচনায় নিয়ে পরিমিতভাবে লিচু বা যে কোনও ফল খেতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

ten + 16 =