ঝরনার জন্ম

রাজীব সরকার ##

দু’টো স্তন উন্মুক্ত করে দাঁড়িয়েছিল পাহাড়টা।
ইতস্তত ছড়িয়ে ছিটিয়ে অজস্র আগাছা
পথ আটকে রেখেছে গুহাটার।
হাজার বছর আগে এক অভিশপ্ত বিকেলে
আগ্নেয়গিরিটা তার শরীরে লাভা ঢেলেছিল।
গনগনে আগুনে পুড়েছিল গোটা শরীর
আধপোড়া শরীরটাকে ছেড়ে গিয়েছিল পাখিরাও।
যায়নি শুধু মন খারাপ করা মেঘটা…
ফিবছর সে জল ঢেলেছে পোড়া দেহে
কালো বুকটাকে ঢেকেছে সবুজ গাছে….
এভাবেই একটু একটু করে যন্ত্রণা ভুলছিল পাহাড়।
মেঘের সঙ্গে প্রেমটাও জমে উঠেছিল তার।
অলস দুপুরে মেঘ ছুঁয়ে যেত পাহাড়টার মন
পাহাড়টাও অপেক্ষায় থাকত মেঘের।
এমনই এক অপেক্ষার বিকেলে কালো হয়ে নামল মেঘটা
তার স্তনযুগল কে চুম্বন করে নামল আরও গভীরে
বিদ্যুতের ঘনঘটা আর ঝড়ের শব্দে বাঁধ ভাঙল পাহাড়টারও।
জঙ্গলের বুক চিরে পাহাড়টার গভীরে ঢুকে পড়েছে বৃষ্টি
অন্ধকার গুহার ভিতর তখন ঝরে পড়ছে দু’এক ফোটা।
মেঘের ভালোবাসার স্পর্শে মাথা নাড়াচ্ছে গাছেরাও।
গুমোট গুহার ভিতর দমকা একটা হাওয়া।
ভিতরে সবটুকু নিস্তরঙ্গতা ভুলিয়ে তখন প্রেমের জোয়ার।
ভালোবাসার সেই জলধারায় জন্ম নিল ঝরণা
মেঘ-পাহাড়ের ভালোবাসার স্বাক্ষী রইল শুধু শ্রাবণ।

আচ্ছা মেঘ যদি হারিয়ে যায় কখনও
গাছগাছালি মরে গিয়ে পাহাড়টার কালো বুকটা যদি বেরিয়ে আসে কোনদিন
সেদিনও কি বলবে, মেঘের ভালোবাসায় জন্ম নিয়েছে ঝরণা?
নাকি, আগ্নেয়গিরির অভিশাপ বয়ে নিয়ে বেড়াবে পাহাড়টা?
শ্রাবণ নিরুত্তর…….

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

12 − ten =