উপকারী আপেল

ইংরেজিতে একটি প্রবাদ আছে, ‘অ্যান অ্যাপল আ ডে কিপস দ্য ডক্টর অ্যাওয়ে’ বহু দিনের এই প্রবাদটা থেকেই বোঝা যায় যে, আপেলের গুণাগুণ কতখানি। ফলটির যে পুষ্টিগুণ রয়েছে, তাতে প্রতিদিন একটি করে খেলেই চিকিৎসকের কাছে আর যাওয়ার প্রয়োজন হবে না।

আপেল ফল হিসেবে বিদেশি হলেও আমাদের দেশে পরিচিত ও বেশ জনপ্রিয়। সহজলভ্য অথচ দাম হাতের নাগালেই, এমন সব ফলগুলোর মধ্যে আপেলকেই সব শ্রেণীর মানুষ অভিজাত ফল হিসেবে গণ্য করে থাকেন। আপেলে যেসব পুষ্টি উপাদান আছে, যা বিভিন্ন ফলে থাকলেও একসঙ্গে একটি ফলে নেই। তাই আপেল খাওয়ার গুরুত্ব অনেক। জেনে নিন আপেলের পুষ্টিগুণ :
১. সুস্থ হার্টের জন্য: আপেলে রয়েছে ফাইট্রোনিউট্রিয়েন্ট উপাদানসমূহ, যা হার্টের স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী। হার্টকে অক্সিজেন-স্বল্পতাজনিত ক্ষতি থেকে রক্ষা করে এ উপাদানগুলো। আপেলের উচ্চ আঁশ জাতীয় উপাদান খারাপ কোলেস্টরোলের মাত্রাকে কমায় ও নিয়ন্ত্রণে রাখে।
২. অ্যালঝেইমার্স প্রতিরোধে: মারাত্মক স্মৃতি বিভ্রম জাতীয় রোগ অ্যালঝেইমার্স প্রতিরোধে কার্যকর ভূমিকা রাখে আপেল।
৩. ফুসফুসের ক্যান্সার প্রতিরোধে: ফুসফুসের ক্যান্সার প্রতিরোধে আপেলের জুড়ি নেই। ১০ হাজার জনের ওপর পরিচালিত একটি গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, যারা বেশি বেশি আপেল খান, তাদের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে ফুসফুসের ক্যান্সারে আক্রান্তহওয়ার ঝুঁকি ৫০ শতাংশ কমে যায়।

৪. ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে: ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধে সহায়তা করে আপেল। যুক্তরাষ্ট্রের করনেল ইউনিভার্সিটির এক গবেষণায় দেখা গেছে, যে মহিলারা দিনে ৬টি আপেল খান, তাদের ক্ষেত্রে ভবিষ্যতে ব্রেস্ট ক্যান্সারেআক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৪৪ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস পায়। আর, যারা প্রতিদিন ৩টিআপেল খান, তাদের ক্ষেত্রে এ ঝুঁকি ৩৯ শতাংশ পর্যন্ত কমে যায়।
৫. কোলন ক্যান্সার প্রতিরোধে: আপেলের মধ্যে পেকটিন জাতীয় একটি উপাদান থাকে। এ উপাদানটি কোলন ক্যান্সার থেকে দূরে রাখে। আপেলের খোসার রসও বেশ উপকারী। তবে, ফরমালিন বা অন্য কেমিক্যালমুক্ত আপেল হলে, তা নিরাপদ।
৬. লিভার ক্যান্সার প্রতিরোধে: আপেলের খোসার রস নিয়মিত পান করে লিভার ক্যান্সারের ঝুঁকি ৫৭ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস করা সম্ভব। অবশ্য, সব ক্ষেত্রেই আপেল কেমিক্যাল মুক্ত হওয়াটা অন্যতম শর্ত।
৭. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে: আপেলে পেক্টিন নামে যে উপাদানটি থাকে, তা থেকে গ্যালাকটিউরোনিক এসিড নিঃসৃত হয়, যা শরীরের ইন্স্যুলিনের চাহিদাকে কমিয়ে দেয় ও ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে।

৮. ওজন কমাতে: ব্রাজিলে পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা গেছে, যে মহিলারা ডায়েট করার সময় প্রতিদিন গড়ে ৩টি আপেল খান, তাদের ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৯. হাড়ের সুরক্ষায়: ফ্রান্সের গবেষকরা দেখেছেন, আপেল অস্টিওপোরোসিস জাতীয় কঠিন হাড়ের সমস্যা প্রতিরোধ করে ও হাড়ের ঘনত্ব বাড়ায়।
১০. হাঁপানি উপশমে: সমপ্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, হাঁপানিতে আক্রান্ত যে শিশুরা প্রতিদিন আপেলের জুস পান করে, তাদের এ সমস্যা তুলনামূলক ভাবে অনেকটা নিয়ন্ত্রণে থাকে। অন্তঃসত্ত্বা মায়েরা যদি প্রতিদিন আপেলের জুস পান করেন, সেক্ষেত্রে ভূমিষ্ঠ শিশুটিও ভবিষ্যতে হাঁপানিতে আক্রান্ত হওয়ার ক্ষেত্রে অনেকটা কম ঝুঁকিতে থাকে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

four − two =