সূচনা পর্বে বাংলা সাহিত্য ও প্রাচীন পুঁথি
তৌফিকুল ইসলাম চৌধুরী, চট্টগ্রাম, বাংলাদেশ
সাহিত্য হল একটা সৃষ্টি বা নির্মিতি। সৃষ্ট ব্যাপার না থাকলে কোন লেখাই সাহিত্য পদবাচ্য হতে পারে না। এ অর্থে শুরুতে বাংলা সাহিত্য কতটা সাহিত্য পদবাচ্য ছিল, তা বলা মুশকিল।তবে আদিতে তা গড়ে উঠে সর্বধর্মের এক তুলনারহিত সমন্বয়ে। শুরুতে এটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর ধর্মকথা, জীবনাচারের কথকথায় সীমাবদ্ধ ছিল। এ সীমাবদ্ধতা অতিক্রম করে কখন থেকে বাংলা সাহিত্য ঠিক সাহিত্যের আদল নিয়েছে তা অর্নিনীত।অবশ্য কাল বিচারে গবেষকরা বাংলা সাহিত্যকে তিন পর্যায়ে ভাগ করেছেন।প্রাচীন যুগ, মধ্য যুগ ও আধুনিক যুগ। কেউ কেউ বলেন, প্রাচীন যুগের আরম্ভ আনুমানিক সাত শতকের মাঝামাঝি থেকে। তবে অধিকাংশ গবেষকের মতে, খ্রীষ্ট্রিয় দশম শতাব্দী থেকে আরম্ভ করে দ্বাদশ শতাব্দীর
শেষ অর্থাৎ বখতিয়ার খিলজীর তুর্কী অভিযানের অব্যবহিত পূর্ববর্তীকাল পর্যন্ত বাংলা সাহিত্যের আদিযুগ বিস্তৃত। দশম শতকে বাংলা ভাষা যখন মাত্র আঁতুর ঘরে , তখনো ‘সংস্কৃত’ ছিল এদেশের সমাজের উঁচু স্তরের ভাষা। বাংলা ভাষা তখন সংগোপনে লালন করতো সাধারণ মানুষ। অবশ্য উৎপত্তি ও বুৎপত্তি বিচারে বাংলা ভাষায় বৈদিক, সংস্কৃত ও আর্য প্রাচীনতার পাশাপাশি বিভিন্ন দেশের শব্দের প্রাচুর্যও আমরা লক্ষ করি। বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের প্রাচীন যুগের নিদর্শন হিসেবে একমাত্র ” চর্যাপদ” পুঁথিই আবিস্কৃত।এছাড়া অন্য কোন লিখিত সাহিত্যের খোঁজ আমাদের জানা নেই।
বাংলা সাহিত্যে মধ্য যুগের সূচনা তের শতকে এবং অবসান আঠারো শতকে।কাল বিচারে এ সময়টা দীর্ঘ। এ সময়ে রচিত হয় অসংখ্য কাহিনী কাব্য, গীতি কবিতা, মঙ্গল কাব্য, প্রণয় কাব্য, চরিত কাব্য, বৈষ্ণব পদাবলী, বাউল কবিতা, শাক্ত পদাবলী, । বাংলা সাহিত্যে আধুনিক যুগের সূচনা উনিশ শতক থেকে, যা আজো চলমান। প্রাচীন ও মধ্য যুগে সাহিত্য রচিত হতো কবিতায় বা পদ্যে।তখন গদ্য বলতে সাহিত্যে বিশেষ কিছু ছিল না।মজার ব্যাপার হল, আলোর পাদপ্রদীপে আসা এসব কবিতা বা পদ্যের সবই মলাটবদ্ধ ছিল প্রাচীন পুঁথির খোলসে।
পু্ঁথিই ছিল বাংলা সাহিত্যের আদি নিয়ামক। অন্যভাবে বললে বলা যায়, বাংলা সাহিত্য আদিতে পুঁথি হিসেবে পরিচিত ছিল। ‘ পু্থি ‘ শব্দটি এসেছে সংস্কৃত ‘পুস্তক ‘ থেকে। তবে প্রাকৃত ‘ পুত্থিয়া’, হিন্দি ‘পোথী’ , অসমীয়া ‘ পুথী’, ফরাসী ‘ পুস্তিন’ও যে বাংলা ‘ পুঁথি’ বা ‘ পুথি’ শব্দের প্রচলনে অনুঘটকের ভূমিকা পালন করেনি তা বলা যাবে না। পুঁথি- সাহিত্য আমাদের ঐতিহ্যের অংশ।এমন এক সময় ছিল, যখন ঘরে ঘরে ছিল পুঁথি। দিনের আলো নিভে গেলেই কুপি জ্বালিয়ে শুরু হতো পুঁথি-পাঠ। পুঁথি- পাঠককে ঘিরে সকলেই জড়ো হতেন এবং মনোযোগ সহকারে শুনতেন।
শিশু-কিশোর-বয়স্ক নির্বিশেষে সকলের কাছে পুঁথি সাহিত্যের অনুপম কাহিনী-আখ্যানগুলো
ছিল অমৃততুল্য। প্রাচীনকালে যখন ছাপাখানা ছিল না, তখনো প্রচলন ছিল পুঁথি’র। এ উপমহাদেশে ত্রয়োদশ শতকের পূর্বে কাগজ ব্যবহারের কোন প্রমাণ পাওয়া যায় না।( Indian
Paleography–Buhler, 1962, Page- 145)।
আর ১৭৭৮ সালের পূর্বে বাংলা ভাষার কোন
ছাপাখানাও এ তল্লাটে ছিল না। ১৭৭৮ সালে হুগলিতে প্রথম বাংলা ছাপাখানা স্হাপিত হয়।এ ছাপাখানা থেকে ইষ্ট ইণ্ডিয়া কোম্পানীর কর্মচারী, বাংলা ভাষার সুপণ্ডিত এন বি হ্যালেড লিখিত ” হ্যালেডের ব্যাকরণ ” বইটি ১৭৭৮ সালে প্রথম বাংলা ভাষায় প্রকাশিত হয়। এ কাজে সহযোগিতা করেন কোম্পানীর আরেক কর্মচারী সুপণ্ডিত উইলকিনস ; তিনি এদেশে প্রচলিত পুঁথির বাংলা হরফের অনুকরণে ছেনি দিয়ে কেটে বাংলা ছাপার হরফ নির্মাণ করেন। বাংলা ছাপার বইয়ের ইতিহাস এখান থেকেই শুরু। তবে এতদঞ্চলে ত্রয়োদশ শতকের পূর্বে কাগজ ব্যবহারের নমুনা বা ১৭৭৮ সালের পূর্বে ছাপানো পাণ্ডুলিপি আবিস্কৃত না হলেও অন্যান্য উপায়ে যে লিখন পদ্ধতি প্রচলিত ছিল, তার যথেষ্ট প্রমাণ রয়েছে। প্রাচীন হস্তলিখিত পুঁথিগুলো সাধারণত ভূর্জছাল, কাপড়ের পট, তেরেট পাতা, তালপাতায় লেখা হতো। তালপাতার পুঁথির বেশীর ভাগই ছিল পূজোর পুঁথি। মাদুলীর মন্ত্রগুলো লেখা হতো ভূর্জছালে, মুসলমানদের ধর্মীয় ঐতিহ্যভিত্তিক বিভিন্ন পুঁথিও লিখিত হতো তালপাতায়।
বলা হয়ে থাকে, ‘ চর্যাপদ ‘ পুঁথি বাংলা ভাষার প্রাচীনতম সাহিত্য নিদর্শন।১৯০৭ খ্রিষ্টাব্দে মহামহোপাধ্যায় হরপ্রসাদ শাস্ত্রী নেপাল রাজ দরবারের পাঠাগার থেকে তা উদ্ধার করেন।অর্বাচিন নেওয়ারি লিপিতে সন্ধ্যা ভাষায় তালপত্রে গ্রথিত অবস্হায় ‘ চর্য্যাচয্য- বিনিশ্চয়’ পু্ঁথি পাওয়া যায়। এতে পঞ্চাশটি গীত ছিল ; তার ভেতর সাড়ে ছেচল্লিশটি সুস্পষ্ট বুঝা যাচ্ছিল। ধারণা করা হয়, বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যরা একটা মূল লিপিতে তাদের হৃদয়াস্বাদন আকীর্ণ করেছিলেন; হয়তো বা প্রাচীন বঙ্গ লিপিতে। কিন্তু পরবর্তীতে এতদঞ্চলে বৌদ্ধ প্রভাব প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেলে এ গীতগুলোর মূল লিপি ও অনুশীলন বিলুপ্ত হয়ে বিভিন্ন অঞ্চলে তা সেখানকার লিপি ও ভাষায় আশ্রিত বা অনুদিত হয়েছে। এজন্য হয়তো চর্যাপদের ভাষায় হিন্দি, ওড়িয়া, অসমীয়া, তিব্বতি, মৈথিলি ভাষার প্রভাব লক্ষণীয়। তবে ড. শহীদুল্লাহ, ড. সুকুমার সেন, অধ্যাপক প্রিয়রঞ্জন সেন, ড.সুনীতি কুমার চট্রোপাধ্যায় প্রমুখ বিদ্ধজনরা মনে করেন, চর্যাপদের ভাষা বাংলা। চর্যাপদের রচনা কাল নিয়েও পণ্ডিতদের মধ্যে বিতর্ক আছে। তবে চর্যা রচয়িতাদের জীবৎকাল বিবেচনায় ড. মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ মনে করেন, সপ্তম শতাব্দীর মধ্যভাগেই বাংলা সাহিত্যের উৎপত্তি হয়েছিল। তিনি লিখেন, ” আমি বাঙালা সাহিত্যের আরম্ভ ৬৫০ খ্রিষ্ট অব্দ বলিয়া নির্দেশ করিয়াছি”। তিনি হরপ্রসাদ শাস্ত্রী উদ্ধারকৃত চর্যাপদের প্রথম চর্যাকার লুইপা’র কাল উল্লেখ করেছেন ৭৩০ থেকে ৮১০ সালের মধ্যে। ( Mohammad Shahidullah, Text 41,
‘ Buddhist Mystic Songs, Dhaka, 1966 IV
)। বিনয়তোষ ভট্রাচার্যের মতে, তার জন্ম ৬৬৯ সালে। ( Benoytosh Bhattacarya, An Introduction To Buddhist Esoterism, Motilal Banarasidas, Delhi, 1980, P- 65)।
চর্যাপদ আবিস্কারের পূর্বে বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের ইতিহাস সম্পর্কে সাধারণ্যে তেমন কোন ধারণাই ছিল না।এ প্রসঙ্গে হরপ্রসাদ শাস্ত্রী লিখেন, ” যখন প্রথম চারিদিকে বাঙ্গালা স্কুল বসান হইতেছিল এবং লোকে বিদ্যাসাগর মহাশয়ের বর্ণ পরিচয়, বোধোদয়, চরিতাবলী, কথামালা পড়িয়া বাঙ্গালা শিখিতেছিল, তখন তাহারা মনে করিয়াছিল, বিদ্যাসাগরই বাঙ্গালা ভাষার জন্মদাতা। কারণ, তাহারা ইংরেজী অনুবাদ মাত্র পড়িত, বাংলা ভাষায় যে আবার একটা সাহিত্য আছে এবং তাহার যে আবার একটা ইতিহাস আছে, ইহা কাহারও ধারণাই ছিল না “।( হরপ্রসাদ শাস্ত্রী, হাজার বছরের পুরাণ বাঙ্গালা ভাষায় বৌদ্ধ গান ও দোহা, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষৎ, কলিকাতা, ১৪১৩, পৃষ্ঠা- ১) ।
চর্যাপদের রচনাকালীন সময়ে বাংলা ভাষা পরিপূর্ণরুপে পরিস্ফূটিত না হলেও এতে প্রাচীন বাংলার ভাষা, জীবন ও সমাজের যে চিত্র পাওয়া যায়, তার ঐতিহাসিক গুরুত্ব বিচারে তা এক মূল্যবান সম্পদ।আমাদের কাব্য সাহিত্যের মালধারা হিসেবে চিহ্নিত ‘ লিরিক ‘ আঙ্গিকটি প্রথম উদ্ভাসিত হয়েছিল চর্যা’য়। বজ্রযানি তান্ত্রিক বৌদ্ধ সিদ্ধাচার্যদের অনাত্নবাদী রপাদর্শ থাকা সত্বেও এতে ব্যক্তিময়তা, ব্যক্তির বেদনাক্লিষ্ট মানসিক উদ্ভাসন সমুপস্হিত, যা লিরিক’কে অনিবার্য করে।তবে চর্যার সব আলোচকই এ ধারণা পোষণ করেন যে, এগুলি রচনার পূর্ব থেকেই ” বাংলা ভাষা ও সাহিত্যের অভিপ্রকাশের কাজ… …. ….. আরম্ভ হয়ে থাকবে “। ( অরবিন্দ পোদ্দার, মানবধর্ম ও বাংলা কাব্যে মধ্যযুগ, পুস্তক বিপণী, কলকাতা, ভারত,৪র্থ মুদ্রণ, প ষ্ঠা– ২০ ) ।
চর্যাপদ আবিস্কারের পর পরই ১৯০৯ খ্রিষ্টাব্দে( ১৩১৬ বঙ্গাব্দে) বসন্ত রঞ্জন রায় বিদ্ববল্লভ পশ্চিমবঙ্গের বাঁকুড়া জেলা থেকে বড়ু চন্ডীদাসের ভণিতার আরো একটি
পুঁথি আবিস্কার করেন, যা ‘ শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন ‘ নামে প্রচলিত। শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন সম্পর্কে ড. সুকুমার সেন বলেন, ” শ্রীকৃষ্ণ কীর্তনে মধ্য কালীন বাঙ্গালা ভাষার প্রাচীন রুপটি যতটা অবিকৃত আছে, এতটা আর কোন পুরানো গ্রন্হে পাই না। চর্যাপদের পরেই বাঙ্গালা ভাষার পুরানো নিদর্শন শ্রীকৃষ্ণ কীর্তনে বহুল লভ্য “। ( ড. সুকুমার সেন, বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস – ১ম খণ্ড-পূর্বার্ধ, তৃতীয় সংস্করণ)। চর্যাপদ ও শ্রীকৃষ্ণ কীর্তনের মাঝখানে আমরা আর কোন সাহিত্য নিদর্শন পাই নি।ধারণা করা হয়, বড়ু চণ্ডীদাশ চর্তুদশ শতাব্দীর কোন এক সময়ে তার নিজস্ব সৃষ্টি ‘ শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন’ রচনা করেছিলেন।প্রাচীন লিপি বিশারদ রাখাল দাস বন্দোপাধ্যায় মনে করেন, শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন পুঁথির প্রাচীন ছাঁচের লিপি ১৩৮৫ খ্রিষ্টাব্দের বাংলা লিপির চেয়েও পুরানো। সুতরাং এই পু্ঁথি তারও আগে সম্ভবত চর্তুদশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে লেখা হয়েছিল।এটা পড়ে মনে হয়, বড়ু চণ্ডীদাশের পূর্বেই ‘সাহিত্য- সৃষ্টিধর্মী’ কবিভাষা হিসেবে ‘ বাংলা ভাষা’ স্হান করে নিয়েছিল।
বস্তুত এঠা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, চর্যাপদ ও শ্রীকৃষ্ণ কীর্তন আবিস্কারের মাধ্যমেই বাংলা সাহিত্যের উষালগ্ন আমাদের দৃষ্টিগোচর হয়, যা এর ভিত্তিভূমি নির্মাণে অসাধারণ অবদান রাখে। পরবর্তীতে একে আরো সুদৃঢ় ভিত্তির উপর দাঁড় করাতে এগিয়ে আসেন বাংলা সাহিত্যের পুরাতনী গ্রন্হের লিখিত আদল বিরাট পুঁথির ভাণ্ডার আবিস্কারক আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ।দুর্লভ ও অঞ্জাত প্রাচীন পুঁথি সংগ্রহ, সম্পাদনা ও তার ভিত্তিতে প্রাচীন ও মধ্যযুগের কবি ও কবিতা সম্পর্কে ছয় শতাধিক প্রবন্ধ লিখে তিনি বাংলা সাহিত্যের ইতিহাস ভূমি সম্প্রসারিত করেছেন।বস্তুত তার পুঁথি সংগ্রহের মাধ্যমেই বাংলা সাহিত্যের হাজার বছরের ধারাবাহিকতা সুস্পষ্ট হয়েছে।তিনি প্রায় সহস্রাধিক পুঁথি সংগ্রহ করেছেন। তার সংগৃহীত ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সংরক্ষিত এ ধরণের ৫৮৩টি পুঁথির রচনাকাল, রচয়িতা, লিপিকাল ও পৃষ্ঠাঙ্কসহ একটি তালিকা আমি ” আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ স্মারকপত্র” এ লক্ষ করেছি।( আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ স্মারকপত্র, আবদুল করিম সাহিত্য বিশারদ ৫০তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন পরিষদ। প্রঞ্জালোক প্রকাশনী।৩০ সেপ্টেম্বর ২০০৩।পৃঃ-৪৮-৬০)। এছাড়া তার সংগৃহীত ৩৩৮ টি পুঁথি রাজশাহী বরেন্দ্র মিউজিয়ামে সংরক্ষিত আছে। লোক গবেষক ড. শামসুজ্জামান৷ খানের মতে, ‘” তার সংগ্রহ, তথ্য নির্দেশ ও সম্পাদকীয় মূল্যায়ন না পেলে হরপ্রশাদ শাস্ত্রী, নলিনী কান্ত ভট্রশালী, ড. দীনেশ সেন, ড. শহীদুল্লাহ, ব্যোমকেশ মুস্তফী, ড. মুহম্মদ এনামূল হক প্রমুখের অনেক উল্লেখযোগ্য কাজ হয়তো করা সম্ভব৷ হতো না”।( প্রাগুক্ত, পৃঃ ২৮৷)। এদের বাইরে আরো অনেকেই পুঁথি নিয়ে কাজ করেছেন, পুঁথি সংগ্রহে জড়িত ছিলেন। এ বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনায় না গিয়েও বলা যায়, প্রাচীন ও মধ্যযুগের সঙ্গে আধুনিক যুগের সেতু বন্ধন হচ্ছে পুঁথি।একারণে সুদূর অতীত থেকে পুঁথি সংগ্রহ ও সংরক্ষণের প্রচেষ্ঠা দৃষ্ট হয়।বস্তুত বাংলা সাহিত্যের উষালগ্ন জানতে হলে আমাদের প্রাচীন পুঁথির কাছে ফিরে যেতেই হয়। এজন্য প্রয়োজন ইতিহাসের ধূলিমলিন আস্তরণ থেকে এসব খু্ঁজে বের করা। আমাদের ইতিহাস-ঐতিহ্য- সাহিত্যের ধারাবাহিকতা রক্ষার স্বার্থে পুঁথির সংরক্ষণ, আরো পুঁথি সংগ্রহ এবং পুঁথির ব্যাপক চর্চা ও গবেষণা প্রয়োজন।
সমৃদ্ধ হলাম। ধন্যবাদ জানাই।